অনেক সময় বিভিন্ন কারণে আমাদের ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়। যেমন – চাকরি, পড়াশোনা, বিয়ে বা স্থায়ীভাবে অন্য জায়গায় বসবাস শুরু করার কারণে নতুন এলাকায় ভোটার হওয়া জরুরি হয়ে পড়ে।
এই আর্টিকেলে আমরা জানবো— ভোটার এলাকা পরিবর্তন প্রত্যয়ন কি, কেন প্রয়োজন, কাদের জন্য বাধ্যতামূলক, কিভাবে লিখবেন, আবেদন প্রক্রিয়া, ফরম্যাট ও PDF ডাউনলোড।
ভোটার এলাকা পরিবর্তন প্রত্যয়ন কেন প্রয়োজন?
- স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন হলে নতুন ভোটার এলাকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য।
- একই ব্যক্তি যেন একাধিক এলাকায় ভোটার না হতে পারেন তা নিশ্চিত করার জন্য।
- ভুয়া ভোটার ও দ্বৈত ভোটার প্রতিরোধের জন্য।
- আইনগত জটিলতা এড়ানোর জন্য।
কারা ভোটার এলাকা পরিবর্তন প্রত্যয়ন জমা দেবে?
- যারা চাকরির কারণে অন্য জেলায় স্থানান্তর হয়েছেন।
- শিক্ষার কারণে দীর্ঘ সময় অন্য এলাকায় বসবাস করছেন।
- স্থায়ীভাবে নতুন ঠিকানায় বসবাস শুরু করেছেন।
- বিবাহের কারণে নারীরা স্বামীর এলাকায় ভোটার হতে চাইলে।
ভোটার এলাকা পরিবর্তন প্রত্যয়ন লেখার নিয়ম
প্রত্যয়নপত্রটি সাধারণত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান/পৌরসভা মেয়র বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কর্তৃক প্রদান করা হয়। লেখার সময় নিচের বিষয়গুলো উল্লেখ করতে হবে:
- আবেদনকারীর পূর্ণ নাম
- পিতা/মাতার নাম
- পুরাতন ঠিকানা (যেখানে আগে ভোটার ছিলেন)
- নতুন ঠিকানা (যেখানে ভোটার হতে চান)
- স্থানান্তরের কারণ
- চেয়ারম্যান/কাউন্সিলরের স্বাক্ষর ও সীল
ভোটার এলাকা পরিবর্তন প্রত্যয়নের নমুনা
প্রত্যয়নপত্র
এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, জনাব/জনাবা __________________, পিতা: __________________, মাতা: __________________, পূর্বে __________________ ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা এবং ঐ এলাকায় ভোটার ছিলেন।
বর্তমানে তিনি স্থায়ীভাবে __________________ ঠিকানায় বসবাস করছেন। তাই তিনি উক্ত এলাকায় ভোটার হতে ইচ্ছুক। তার পুরাতন এলাকার ভোটার তথ্য পরিবর্তন করে নতুন এলাকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
আমি নিশ্চিত করছি যে, উক্ত তথ্য সঠিক এবং প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।
(স্বাক্ষর ও সীল)
চেয়ারম্যান/কাউন্সিলরের নাম
ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা
তারিখ: ____________
ভোটার এলাকা পরিবর্তন প্রত্যয়ন PDF ডাউনলোড

আপনাদের সুবিধার্থে ভোটার এলাকা পরিবর্তন প্রত্যয়নের নমুনা PDF আকারে ডাউনলোড করে প্রিন্ট করার ব্যবস্থা রাখা হলো। নিচের লিংকে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে পারবেন:
ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- জন্ম নিবন্ধন সনদ / এসএসসি সার্টিফিকেট
- পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড
- নতুন এলাকার নাগরিকত্ব সনদ
- ছবি (পাসপোর্ট সাইজ)
- ভোটার এলাকা পরিবর্তন প্রত্যয়নপত্র
ভোটার এলাকা পরিবর্তনের আবেদন প্রক্রিয়া
- প্রথমে নতুন ঠিকানার ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা থেকে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করুন।
- প্রত্যয়নপত্র সঠিকভাবে পূরণ করে চেয়ারম্যান/কাউন্সিলরের স্বাক্ষর ও সীল নিন।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ স্থানীয় নির্বাচন অফিসে আবেদন জমা দিন।
- তথ্য যাচাই শেষে পুরাতন এলাকার ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে নতুন এলাকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
নতুন এনআইডি কার্ড কিভাবে পাবেন?
ভোটার এলাকা পরিবর্তন সম্পন্ন হলেও নির্বাচন অফিস থেকে নতুন এনআইডি কার্ড স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেয়া হবে না। এর জন্য আপনাকে আলাদা করে Reissue (রিইস্যু) আবেদন করতে হবে।
সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)
১. ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কত সময় লাগে?
সাধারণত ১৫-৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সম্পন্ন হয়।
২. অনলাইনে কি এলাকা পরিবর্তন করা যায়?
বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সরাসরি নির্বাচন অফিসে গিয়ে করতে হয়।
৩. প্রত্যয়ন ছাড়া কি ভোটার এলাকা পরিবর্তন সম্ভব?
না, প্রত্যয়নপত্র ছাড়া ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা যাবে না।
উপসংহার
ভোটার এলাকা পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। সঠিকভাবে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিলে সহজেই নতুন ঠিকানায় ভোটার হওয়া যায়। তাই নির্ধারিত নিয়মে আবেদন করুন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন।



