চারিত্রিক সনদ অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম ২০২৫

চারিত্রিক সনদ অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম ২০২৫

চারিত্রিক সনদপত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি যা সাধারণত চাকরি, ভিসা আবেদন, বিদেশে পড়াশোনা বা অন্য কোনো সরকারি-বেসরকারি কাজে ব্যবহার হয়। আগে এই সনদটি পেতে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনে গিয়ে আবেদন করতে হতো। তবে এখন আপনি নিজেই ঘরে বসে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। এই গাইডে আমরা ২০২৫ সালে অনলাইনে চারিত্রিক সনদপত্রের আবেদন করার পুরো প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে দেখাবো।

চারিত্রিক সনদ (Character Certificate) হলো এমন একটি সরকারি নথি যা কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে তার নৈতিক চরিত্র, অপরাধমূলক রেকর্ড না থাকা ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করে। এটি সাধারণত প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার প্রত্যয়নের ভিত্তিতে ইস্যু করা হয়।

চারিত্রিক সনদ আপনার নিজ এলাকার স্থানীয় সরকার অফিস থেকে পাওয়া যায়:

  • ইউনিয়ন পরিষদ
  • পৌরসভা
  • সিটি কর্পোরেশন

এছাড়া এখন এটি অনলাইনে prottoyon.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করেই সংগ্রহ করা যায়।

  • ভোটার আইডি কার্ড (যদি না থাকে, জন্ম নিবন্ধন সনদ)
  • পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  • মোবাইল নম্বর
  • ইমেইল (যদি থাকে)

প্রথমে যান 👉 https://prottoyon.gov.bd

নতুন ব্যবহারকারী হলে “নিবন্ধন করুন” এ ক্লিক করে আপনার তথ্য দিয়ে একাউন্ট তৈরি করুন। আগেই একাউন্ট থাকলে লগইন করুন।

লগইন করার পর “নতুন আবেদন” অথবা “চারিত্রিক সনদ” নির্বাচন করুন। এরপর “আবেদন করুন” বাটনে ক্লিক করুন।

  • নাম, পিতার নাম, মাতার নাম
  • বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা
  • জন্ম তারিখ
  • জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন নম্বর
  • পেশা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা
  • যদি সব তথ্য সঠিক থাকে, তাহলে “সব ঠিক আছে” তে ক্লিক করুন।
  • যদি কোনো তথ্য ভুল থাকে, তাহলে “পরিবর্তন” এ ক্লিক করে সংশোধন করুন।
  • বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় আবেদন করলে: ৩১.৫০ টাকা
  • শুধু বাংলা বা শুধু ইংরেজিতে আবেদন করলে: ১৫ টাকা

পেমেন্ট মাধ্যম:

  • বিকাশ
  • নগদ
  • রকেট
  • মোবাইল ব্যাংকিং
  • ব্যাংক কার্ড
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

এরপর আপনাকে ঠিকানার ধরণ ও অফিস নির্বাচন করতে হবে — যেমন ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন।

পেমেন্ট সম্পন্ন হলে আপনার আবেদন আইডি প্রদর্শিত হবে। এই আইডিটি সংরক্ষণ করে রাখুন।

এরপর নিচের ডকুমেন্টগুলো নিয়ে অফিসে গিয়ে আবেদন জমা দিন:

  • ভোটার আইডি/জন্ম নিবন্ধন
  • ছবি
  • আপনার চারিত্রিক সনদ চাওয়ার কারণ

চারিত্রিক সনদ সাধারণত গেজেটেড বা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার নাম ও পদবিসহ স্বাক্ষরিত হতে হয়। প্রয়োজন হলে নিচের তথ্যগুলো থাকতে পারে:

  • আবেদনকারীর নাম
  • জন্মতারিখ
  • ঠিকানা
  • পিতার নাম
  • অপরাধমূলক রেকর্ড নেই এমন ঘোষণা

অনলাইনে আবেদন করার সময় ইংরেজি ভাষা নির্বাচন করুন। তাহলে সনদটি ইংরেজিতে ইস্যু হবে।

আমি নিজে ২০২৫ সালে চারিত্রিক সনদের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলাম। একাউন্ট খোলা ও তথ্য দেওয়ার পর পেমেন্ট করে ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে ডকুমেন্ট জমা দিই। মাত্র ৫ কার্যদিবসেই আমার চারিত্রিক সনদ হাতে পেয়ে যাই। ঘরে বসেই সবকিছু করা যায়, তাই এটা খুবই সহজ ও সময় সাশ্রয়ী পদ্ধতি।

চারিত্রিক সনদপত্র অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি এখন সহজ এবং আধুনিক। আপনি চাইলে নিজের মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে ঘরে বসেই আবেদন করতে পারেন। এতে যেমন সময় ও খরচ সাশ্রয় হবে, তেমনি হয়রানি থেকেও মুক্তি পাবেন।

প্রশ্নোত্তর (FAQ)

প্রশ্ন ১: চারিত্রিক সনদ কোথায় থেকে পাওয়া যায়?
উত্তর: ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন থেকে পাওয়া যায়। অনলাইনে আবেদন করে সংগ্রহ করা যায়।

প্রশ্ন ২: অনলাইনে চারিত্রিক সনদ আবেদনের জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে?
উত্তর: ভোটার আইডি/জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, মোবাইল নম্বর।

প্রশ্ন ৩: কত দিনে চারিত্রিক সনদ হাতে পাওয়া যায়?
উত্তর: সাধারণত ৫-১০ কার্যদিবসের মধ্যে।

প্রশ্ন ৪: চারিত্রিক সনদ পাওয়ার জন্য কোনো সাক্ষাৎকার লাগে কি?
উত্তর: সাধারণত না, তবে ইউনিয়ন অফিসে ডকুমেন্ট যাচাই করা হতে পারে।

প্রশ্ন ৫: ইংরেজি ভাষায় চারিত্রিক সনদ কিভাবে পাব?
উত্তর: আবেদন করার সময় ইংরেজি ভাষা নির্বাচন করতে হবে।

প্রশ্ন ৬: চারিত্রিক সনদ ফরম্যাট কোথায় পাব?
উত্তর: অনলাইনে ফর্ম পূরণের সময় অটো ফরম্যাট তৈরি হবে, যা PDF আকারে ডাউনলোড করা যাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Review Your Cart
0
Add Coupon Code
Subtotal