জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার নিয়ম ২০২৫

অনেক সময় অজ্ঞতা বা ভুল তথ্যের কারণে জন্ম নিবন্ধনে বিভিন্ন ধরনের ভুল থাকে, যেমন নামের বানান ভুল, পিতামাতার নামের ভুল, জন্মতারিখের গরমিল বা বাংলা তথ্য ঠিক থাকলেও ইংরেজি অংশ অনুপস্থিত থাকা। আবার পুরাতন জন্ম নিবন্ধনে ধর্মের তথ্য না থাকাও একটা বড় সমস্যা। এসব ভুলের কারণে পরে পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা শিক্ষা সনদ তৈরির সময় জটিলতা দেখা দেয়।


তাই একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে সময় থাকতেই জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আজকের এই গাইডে আমরা জানবো— কিভাবে সহজে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করবেন, কোথায় আবেদন করতে হবে, কী কী কাগজপত্র লাগবে, কত টাকা ফি লাগে এবং কতদিন সময় লাগে।

বর্তমানে মোবাইল ফোন বা ডেস্কটপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের অনলাইন আবেদন করা যায়। অনলাইনে সংশোধনের জন্য নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে (https://bdris.gov.bd/br/correction) গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

সংশোধনের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের দরকার হয়, যেগুলো হলো:

  • নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)।
  • পিতার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)।
  • মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)।
  • বিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত সনদপত্রের ফটোকপি (যদি থাকে)।
  • পাসপোর্টের ফটোকপি (যদি থাকে)

টিপস:

ডকুমেন্টের সব তথ্য যেন একে অপরের সাথে মিলে যায়, সেটা নিশ্চিত করে নিন। এতে সংশোধন প্রক্রিয়া সহজ হবে।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের ধাপসমূহ

  • ১. BDRIS.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
  • ২. “জন্ম নিবন্ধন সংশোধন” অপশনে ক্লিক করুন।
  • ৩. ফরমে সঠিক তথ্য পূরণ করুন।
  • ৪. সংশোধনের কারণ উল্লেখ করুন (যেমন—নামের বানান ভুল, জন্মতারিখের গরমিল ইত্যাদি)।
  • ৫. নির্ধারিত অফিস (ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশন) নির্বাচন করুন।
  • ৬. আবেদন সম্পন্ন করে রিসিপ্ট সংগ্রহ করুন।

কোথায় আবেদন জমা দিতে হবে?

অনলাইনে আবেদন করার পর সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা অথবা সিটি কর্পোরেশন অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। অফিসের নির্ধারিত ফি জমা দেওয়ার পর সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হবে।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধনে কত টাকা লাগে?

সাধারণত জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য ফি নির্ধারিত থাকে:

সাধারণ ফি: ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকার মধ্যে।

জরুরি সংশোধন ফি: কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি প্রযোজ্য হতে পারে।

নোট: ফি ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার ভেদে ভিন্ন হতে পারে।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন আবেদন করার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন করা আছে কিনা।

প্রথমেই আপনাকে যে কোন ব্রাইজার ওপেন করতে হবে এবং

https://bdris.gov.bd/br/correction এই ঠিকানায় ঢুকতে হবে।

এরকম একটা ডায়লগ বক্স চলে আসবে

পরবর্তীতে আপনি টপবারের জন্ম নিবন্ধন অপসনের উপর মাউসের কার্চার ধরলেই কয়েকটি অপসন দেখাবে সেখানের জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদনের উপর একটা ক্লিক করবেন আপনাকে এমন একটা পেজে নিয়ে যাবে

এখন জন্ম বিন্ধন নং এর ঘরে আপনারে ১৭ সংখ্যার নম্বরটি লিখবেন, জন্ম তারিখ লিখবেন এবং ক্যাপচা কোডটি যেভাবে আছে সেভাবেই লিখবেন

একদম শেষে আপনি অনুসন্ধান বক্সে ক্লিক করবেন ক্লিকের পর নিচের এরকম একটা পেজ চলে আসবে

এখন আপনি নির্বাচন করুন এ ক্লিক করবেন এবং কনফার্ম এ ক্লিক করবেন আরপর আপনাকে মুল কাজের জায়গায় নিয়ে যাবে

এখানে আপনি বিষয়ের উপর ক্লিক করে বিষয় নির্বাচন করবেন আর সংশোধনীয় তথ্য লিখবেন যেমন নিজের নাম বাংলায়, এবং আরো তথ্য সংযোহজন করুন এ ক্লিক করে নিজের নাম ইংরেজীতে, পিতার নাম বাংলায়, পিতার নাম ইংরেজীতে, মাতার নাম বাংলায়, মাতার নাম ইংরেজীতে, জন্ম তারিখ, কততম সন্তান, আপনার যদি জাতীয় পরিচয়পত্র থাকে তাহলে Nid নম্বর যুক্ত করতে পারেন

সব তথ্য দেওয়ার পর সংযোজন বক্সে ক্লিক পরে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করবেন।

তথ্য সংযোজন করার পর আপনার এলাকা ম্যাপিং করুন অর্থাৎ দেশের নাম, বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, ডাকঘর, গ্রাম, ও বাসা ও সড়ক নম্বর লিখুন অন্যথায় সংশিষ্ট অফিস এলাকা ম্যাপিং না থাকায় আপনার সম্পর্ন ডিজিলাইজড জন্ম নিবন্ধন ডাউনলোড করে প্রিন্ট করতে পারবেন না।

নিচে আবেদনকারীর তথ্য হিসাবে পিতা, মাতা বা নিজ সিলেক্ট করতে পারেন এখানে নিজ সিলেক্ট করলে সবথেকে ভালো হয় না হলে তাদের জন্ম নিবন্ধন  ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দেওয়া লাগবে

সর্ব শেষে আপনি কাছে থাকা মোবাইল নম্বর দিবেন এবং মোবাইলে যাওয়া OTP দিবেন এবং সাবমিট এ ক্লিক করবেন এবং আবেদন সম্পন্য করবেন। আবেদন সম্পন্য হলে আপনাকে একটি সংশোধন আবেদন নম্বর দিবে আপনি আবেদন নম্বরটি সংরক্ষন করবেন-

১. প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র

২. শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ

৩. পাসপোর্টের কপি(যদি থাকে)

৪. নিজ জাতীয় পরিচয়পত্র (যদি থাকে)

৫. পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র

৬. টিকা কার্ড/ হাসপাতালের সনদ

৭. স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন             কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র

৮. স্থায়ী ঠিকানার হালনাগাদ কর পরিশোধের রসিদ

৯. বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন       বিদ্যুৎ/ ইউটিলিটি বিলের কপি ইত্যাদী

আপনি আদেন সাবমিট দেওয়ার আগে বার বার খেয়াল করবেন কোথাও ভুল আছে কিনা। একবার আবেদন সাবমিট হয়ে গেলে আর সংশোধন করার ব্যবস্থা থাকে না।

আবেদনের প্রিন্ট কপি ও প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র সংশ্লিষ্ট জন্ম নিবন্ধন অফিসে জমা দিন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Review Your Cart
0
Add Coupon Code
Subtotal